জ্ঞানচক্ষু গল্পের ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নের উত্তর, 25+ প্রশ্ন

Last Update : June 29, 2024

প্রিয় শিক্ষার্থীরা,

মাধ্যমিক বাংলা জ্ঞানচক্ষু গল্প আশাপূর্ণা দেবীর || মাধ্যমিক জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে ৩ নম্বরের ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নের উত্তর ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর | Ten Bengali Examination – মাধ্যমিক বাংলা থেকে ৩ নম্বরের প্রশ্ন ও উত্তর

জ্ঞানচক্ষু গল্পের ব্যাখ্যাধর্মী প্রশ্নের উত্তর, 25+ প্রশ্ন

জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে 25+ ব্যাখ্যাধর্মী ৩ নম্বরের প্রশ্নোত্তর, আশাপূর্ণা দেবী, দশম শ্রেণির বাংলা


জ্ঞানচক্ষু – আশাপূর্ণা দেবী

ব্যাখ্যামূলক প্রশ্ন (মান – ৩)

পয়েন্ট সমূহ

প্র। ১। “কথাটা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল” – কোন্ কথা শুনে কেন তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল?

(উত্তর) কোন কথা : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। ছোটো মেসোমশাই একজন লেখক – এ কথা শুনে তপনের চোখ মার্বেল হয়ে গেল।

কারণ : তপনের ধারণা ছিল লেখকরা বোধ হয় অন্য জগতের মানুষ। তাই একজন লেখককে সামনে থেকে দেখা তার কাছে এক স্বপ্নপূরণের মতো। ছোটোমেসো বই লেখেন আর সেই বই ছাপা হয় শুনে তপনের চোখ স্বাভাবিকভাবেই মার্বেলের মতো হয়ে গিয়েছিল। একজন ‘সত্যিকার লেখক’-কে যে এভাবে সামনে থেকে দেখা সম্ভব সেটাই তপনের কাছে অবিশ্বাস্য ছিল।

প্র। ২। “নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গেল তপনের” – তপন কোথায় নতুন মেসোকে দেখেছিল? কীভাবে তপনের নতুন মেসোকে দেখে জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল?

(উত্তর) প্রথম অংশ : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে গিয়ে তপন নতুন মেসোকে দেখেছিল।

দ্বিতীয় অংশ : তপনের ভাবনায় লেখকরা ছিল এক অন্য জগতের মানুষ। কিন্তু লেখক ছোটো মেসোমশাইকে দেখে তার ধারণা সম্পূর্ণ পালটে যায়। তপন দেখল, নিছক সাধারণ মানুষের মতোই তাঁর সমস্ত আচার-আচরণ। তার বাবা, ছোটোমামা বা মেজোকাকুর মতোই তিনিও সিগারেট খান, দাড়ি কামান, বেশি খাবার দিলে বারণ করেন, তর্কে মেতে ওঠেন, দেশের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করে সিনেমা দেখতে কিংবা বেড়াতে চলে যান। এসব দেখেই তপনের জ্ঞানচক্ষু খুলে গিয়েছিল।

প্র। ৩। “আর সেই সুযোগেই দেখতে পাচ্ছে তপন।” – কোন্ সুযোগে তপন কী দেখতে পাচ্ছে?

(উত্তর) প্রথম অংশ : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। ছোটোমাসির বিয়ে উপলক্ষ্যে মামার বাড়িতে তপনের আসা এবং গরমের ছুটি থাকায় মামার বাড়িতে থেকে যাওয়াকেই সুযোগ বলা হয়েছে।

তপনের দেখার অভিজ্ঞতা : গরমের ছুটি থাকায় বিয়ের পর-পরই ছোটো মেসোমশাইও নতুন শ্বশুরবাড়িতে কয়েকদিন কাটাচ্ছিলেন। তিনি একজন লেখক। এর আগে কোনো লেখককে সামনাসামনি দেখার

সুযোগ হয়নি তপনের। লেখকরা যে আকাশ থেকে পড়া কোনো জীব নয়, নিতান্তই সাধারণ মানুষ, তা এভাবেই প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হয় তপনের।

প্র। ৪। “তপন অবশ্য মাসির এই হইচইতে মনে মনে পুলকিত হয়।” – মাসি কেন হইচই করছিলেন এবং তাতে তপনের পুলকিত হওয়ার কারণ কী?

(উত্তর) মাসির হইচই করার কারণ : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। তপনের লেখা গল্পটা হাতে পেয়ে ছোটোমাসি তপনকে উৎসাহিত করার জন্য হইচই শুরু করে দিয়েছিল।

তপনের পুলকিত হওয়ার কারণ : তপনের ছোটোমাসি গল্পের কিছুটা অংশ পড়ে তপনের নতুন মেসোর হাতে দেয়। নতুন মেসো কলেজের অধ্যাপক এবং পাশাপাশি একজন লেখক। প্রথমে আপত্তি করলেও লেখক ছোটোমেসো অবশ্যই তার গল্পটার ভালোমন্দ বিচার করতে পারবেন – এই ভাবনাতেই তপন রোমাঞ্চে পুলকিত হয়ে ওঠে।

প্র। ৫। “রত্নের মূল্য জহুরির কাছেই” – এখানে ‘জহুরি’ বলতে কার কথা বোঝানো হয়েছে? কথাটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।

(উত্তর) ‘জহুরি’-র পরিচয় : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। আলোচ্য অংশটিতে ‘জহুরি’ বলতে তপনের লেখক ছোটোমেসোর কথা বলা হয়েছে।

তাৎপর্য বিশ্লেষণ : তপন জীবনে প্রথমবার গল্প লিখে তার ছোটোমাসিকে দেখায়। ছোটোমাসি লেখাটি হাতে পাওয়ামাত্র তাঁর স্বামীকে দেখাতে নিয়ে যায়। তপনের ছোটোমেসো লেখক ছিলেন। জহুরি যেমন আসল আর নকল রত্নের তফাৎ বুঝতে পারেন, তেমনই একজন লেখকই বলতে পারেন কোন্ লেখাটা ভালো আর কোন্ লেখাটা খারাপ। তাই তপন ভেবেছিল এই লেখার আসল মূল্য শুধু তার মেসোমশাই-ই বুঝবেন।

প্র। ৬। “মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে সেটা।” – কোনটি, কেন মেসোর উপযুক্ত কাজ হবে বলে বক্তা মনে করেছে?

(উত্তর) কোন্‌ কাজ : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। তপনের লেখা গল্প পত্রিকায় ছাপানোর ব্যবস্থা করে দিলে সেটা ছোটোমেসোর উপযুক্ত কাজ হবে।

কেন উপযুক্ত : তপন একটা গল্প লিখেছিল। ছোটোমাসি সেই গল্পটি ছাপাবার উদ্দেশ্যে তপনের ছোটোমেসোর হাতে দেয়। মেসো গল্পটি পড়েন এবং বলেন যে, একটু কারেকশান করে দিয়ে সেটি ছাপতে দেওয়া চলে। তপনের উদ্যোগকে উৎসাহ দিতে ছোটোমাসি তার স্বামীকে গল্পটি ছাপিয়ে দিতে অনুরোধ করে। এবং ছোটোমাসির মতে সেটাই হবে তার স্বামী অর্থাৎ তপনের ছোটোমেসোর উপযুক্ত কাজ।

প্র। ৭। “সবাই তপনের গল্প শুনে হাসে।” – কখন? সবাই তপনের গল্প শুনে হাসলেও, তপনের ছোটোমেসো তাকে কী বলেছিলেন?

(উত্তর) হাসির মুহূর্ত : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। বিকেলে চায়ের টেবিলে সকলে তপনের গল্প শুনে হেসেছিল।

ছোটোমেসোর বক্তব্য : ছোটোমেসো প্রশংসা করে বলেছিলেন যে, তপনের বয়সি সমস্ত ছেলে রাজারানির গল্প কিংবা খুন জখম, অ্যাকসিডেন্ট নিয়ে গল্প লেখে। কিন্তু তপন এত অল্পবয়সেই চেনা গণ্ডির বাইরে বেরিয়েছে। রাজারানির গল্প, খুন-জখম-অ্যাকসিডেন্টের গল্প, না খেতে পেয়ে মরে যাওয়ার গল্প বাদ দিয়ে সে নিজের স্কুলে ভরতি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা এবং নিজের অনুভূতির বিষয়ে গল্প লিখেছে, যা প্রশংসার যোগ্য।

প্র। ৮। “তপন বিহ্বল দৃষ্টিতে তাকায়।” – কখন তপনকে এভাবে দেখা যায় এবং তপনের বিহ্বলতার কারণ কী?

(উত্তর) উদ্দিষ্ট সময় : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। যখন তপনের গল্পটি নিয়ে বাড়িতে আলোচনা চলছিল এবং ছোটোমেসো তার লেখার প্রশংসা করছিলেন তখনই তপন বিহ্বল হয়ে গিয়েছিল।

তপনের বিহ্বলতার কারণ : আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে যে গল্পটি সে লিখেছিল, সেটি ছিল তার সৃষ্টিশীলতার প্রথম প্রকাশ। সেটি পত্রিকায় ছাপা হবে – এই আশা তপনকে পুলকিত করেছিল। তাছাড়া তার নতুন মেসো তপনের লেখাটার এবং বিষয় নির্বাচনের প্রশংসা করেছিলেন। ‘ওর হবে।’ – একজন প্রতিষ্ঠিত লেখকের মুখে নিজের এই প্রশংসা শুনে তপন আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়েছিল।

প্র। ৯। “গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল তপনের” – তপনের গায়ে কখন এবং কেন কাঁটা দিয়ে উঠল?

(উত্তর) কখন : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। জীবনের প্রথম গল্পটি লিখে ফেলার পর তপন নিজে যখন সেটা পড়েছিল তখনই তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠেছিল।

কেন : একদিন দুপুরে যখন চারিদিক নিস্তব্ধ, সে একটা খাতা আর কলম নিয়ে মামাবাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে বসে সারাদুপুর ধরে একটা আস্ত গল্প লিখে ফেলে। গল্প লেখার পর সে নিজেই গোটা গল্পটা লিখেছে ভেবে অবাক হয়ে যায়। গল্প শেষ করার পর আনন্দে, উত্তেজনায় তপনের সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে ওঠে।

প্র। ১০। “তপনকে এখন ‘লেখক’ বলা চলে” – এ কথা মনে হওয়ার কারণ কী? তপনের গল্পের নাম কী ছিল?

(উত্তর) মনে হওয়ার কারণ : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। তপন ছোটোবেলা থেকে অনেক বই পড়ে গল্পে আগ্রহী হয়ে ওঠে। একদিন দুপুরে তপন তার বিদ্যালয়ে ভরতির প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা গোটা গল্প লিখে ফেলে। একটা গোটা গল্প নিজে লিখে ফেলেছে, এ কথা ভেবে সে অবাক হয়ে যায়। তাই তখন তপনের মনে এই বিশ্বাস জন্মায় যে, তাকেও এখন লেখক বলা যেতে পারে।

তপনের লেখা গল্পের নাম : তপনের লেখা গল্পের নাম ছিল ‘প্রথম দিন’।

প্র। ১১। “একটা উত্তেজনা অনুভব করে তপন।” – তপনের উত্তেজনার কারণ বর্ণনা করো। উত্তেজিত হয়ে তপন কী করেছিল?

(উত্তর) উত্তেজনার কারণ : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। এক নির্জন দুপুরে মামার বাড়ির তিনতলার সিঁড়িতে বসে তপন হোমটাস্কের খাতায় একটি গল্প লিখে ফেলে। গল্পটি পড়ে সে নিজেই অবাক হয়। নিজের যোগ্যতার প্রতি তার বিশ্বাস জন্মায়। সে সত্যিই একজন লেখক হতে চলেছে – এই ভাবনাই তাকে উত্তেজিত করে।

তপনের প্রতিক্রিয়া : উত্তেজিত তপন দ্রুত নীচে নেমে আসে এবং তার ‘চিরকালের বন্ধু’ ছোটোমাসিকে গল্প লেখার খবরটা দেয়।

প্র। ১২। “আঃ ছোটোমাসি, ভালো হবে না বলছি।” – কার উক্তি? এরূপ বলার কারণ কী?

(উত্তর) বক্তা : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। এই কথা তপন বলেছে।

বলার কারণ : তপন এক নিস্তব্ধ দুপুরে তার জীবনের প্রথম গল্পটি লিখে ফেলার পরে তার ‘চিরকালের বন্ধু’ ছোটোমাসিকে সেই খবর দিতে যায়। বছর আটেকের বড়ো ছোটোমাসি তার গল্পটা সবটা না পড়েই একটু চোখ বুলিয়ে লেখাটির প্রশংসা করে এবং জানতে চায় যে সেটি কোনো জায়গা থেকে তপন নকল করেছে কি না। এ কথার জবাব দিতে গিয়েই কিছুটা অভিমানের সুরে তপন প্রশ্নে উল্লিখিত মন্তব্যটি করে।

প্র। ১৩। “এদিকে বাড়িতে তপনের নাম হয়ে গেছে…” – বাড়িতে তপনের কী কী নাম কেন প্রচলিত হয়েছিল?

(উত্তর) তপনের বিভিন্ন নাম : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। তপনের বাড়িতে নাম হয়েছিল ‘কবি’, ‘সাহিত্যিক’, ‘কথাশিল্পী’।

প্রচলিত হওয়ার কারণ : তপন তার লেখক ছোটো মেসোমশাইয়ের থেকে বাহবা লাভের পর গল্প লেখার ব্যাপারে আরও উৎসাহী হয়ে ওঠে। মেসোমশাই পত্রিকায় প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার গল্পটি নিয়ে গিয়েছিলেন। তারজন্যও তপনের কাতর অপেক্ষা চলতে থাকে। এদিকে তার লেখা গল্পটি বাড়িতে আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। বাড়ির সদস্যরা খানিক মশকরা ও ঠাট্টা মিশিয়েই তপনের নামের সঙ্গে ‘কবি’, ‘সাহিত্যিক’, ‘কথাশিল্পী’ অভিধাগুলি জুড়ে দেন।

প্র। ১৪। “বুকের রক্ত ছলকে ওঠে তপনের।” – কখন, কেন তপনের এই অবস্থা হয়েছিল?

(উত্তর) কখন : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। মেসোর হাতে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা দেখে তপনের এরূপ অবস্থা হয়েছিল।

এমন অবস্থা হওয়ার কারণ : তপনের লেখা গল্পটি তার নতুন মেসো ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপিয়ে দেবেন বলে নিয়ে গিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন তপন সেই অপেক্ষায় বসেছিল। তারপর একসময় সে ভুলেই গিয়েছিল গল্পটির কথা। এরপর হঠাৎই তার ছোটোমাসি আর মেসো তাদের বাড়ি বেড়াতে এলেন। তপন মেসোর হাতে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা দেখতে পেল। তার গল্প ছাপা হয়েছে—এই প্রত্যাশাতেই তার বুকের রক্ত যেন ছলকে উঠেছিল।

প্র। ১৫। “পৃথিবীতে এমন অলৌকিক ঘটনাও ঘটে?” – অলৌকিক ঘটনাটি কী? তাকে অলৌকিক বলার কারণ ব্যাখ্যা করো।

(উত্তর) অলৌকিক ঘটনা : আশাপূর্ণা দেবীর ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্প থেকে আলোচ্য অংশটি নেওয়া হয়েছে। অলৌকিক ঘটনাটি ছিল ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের লেখা প্রথম গল্পটির প্রকাশ হওয়া।

অলৌকিক বলার কারণ : ‘অলৌকিক’ কথাটির অর্থ যা বাস্তবে সম্ভব নয়। দীর্ঘ অপেক্ষার পরে তপন যেদিন দেখল যে, সত্যিই ছোটোমেসোর প্রতিশ্রুতি মত তার গল্প পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সেটা তার কাছে অবিশ্বাস্য বলে মনে হয়। কারণ ছাপার অক্ষরে তার লেখা গল্প হাজার হাজার ছেলের হাতে ঘুরবে এ ঘটনাকে তপনের এতটাই অসম্ভব বলে মনে হয় যে, সে সেটিকে ‘অলৌকিক’ বলে মনে করে।

প্র। ১৬। “সারা বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়” – ‘শোরগোল’ কথার অর্থ কী? কোন ঘটনায় এই শোরগোল পড়ে যায়?

(উত্তর) ‘শোরগোল’ শব্দের অর্থ : ‘শোরগোল’ কথাটির অর্থ হইচই।

শোরগোল পড়ে যাওয়া : নিজের লেখা প্রথম গল্পটি ছোটোমেসোর প্রতিশ্রুতিমতো পত্রিকায় ছাপার অক্ষরে দেখার জন্য অপেক্ষা করতে করতে হতাশ হয়ে পড়ে তপন। এই সময়েই সন্ধ্যাতারা পত্রিকা নিয়ে ছোটোমাসি এবং মেসোর আগমন ঘটে তাদের বাড়িতে। ছাপার অক্ষরে নিজের লেখা, সূচিপত্রে নিজের নাম দেখে তপন যখন শিহরিত, তখনই বাড়িতেও শোরগোল পড়ে যায়। তপনের লেখা গল্পটি সকলের মধ্যেই আলোড়ন তোলে।

প্র। ১৭। “আজ আর অন্য কথা নেই” – কোন্ দিনের কথা বলা হয়েছে? সেদিন অন্য কোনো কথা নেই কেন?

(উত্তর) উদ্দিষ্ট দিন : ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকা নিয়ে যেদিন তপনের ছোটোমাসি এবং ছোটোমেসো তপনের বাড়িতে আসেন এখানে সেই দিনের কথা বলা হয়েছে।

অন্য কোনো কথা না-থাকার কারণ : ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকাতেই প্রকাশিত হয়েছিল তপনের লেখা প্রথম গল্প ‘প্রথম দিন’। এ ঘটনায় বাড়িতে শোরগোল পড়ে যায়। মেসোর কারেকশানের কথা ছড়িয়ে পড়ে। তপনের বাবা, তার মেজোেকাকু-সহ গোটা বাড়ি তপনের গল্প আর তা প্রকাশে মেসোর ভূমিকা নিয়েই শুধু আলোচনা করে। তাই সেদিন সেখানে অন্য কোনো কথা ছিল না।

প্র। ১৮। “তপন যেন কোথায় হারিয়ে যায় এইসব কথার মধ্যে।” – ‘এইসব কথা’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? তপনের হারিয়ে যাওয়ার কারণ কী?

(উত্তর) ‘এইসব কথা’-র অর্থ : ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তপনের গল্প প্রকাশের পরে মেসো সুকৌশলে প্রকাশ করে দেন তাঁর ‘কারেকশান’- এর কথা। সে কথাটাই এরপর ছড়িয়ে পড়ে সারা বাড়িতে। তপনের বাবা যাবতীয় কৃতিত্ব মেসোমশাইকেই দেন। তার মেজোকাকু বলেন যে, ওরকম মেসো থাকলে তাঁরাও গল্প লেখার চেষ্টা করতেন। এমনকি তিনি না থাকলে তপনের গল্প সম্পাদক যে ছুঁয়েও দেখতেন না, সে-কথাও বলা হয়। ‘এইসব কথা’ তপনকে প্রভাবিত করে।

তপনের হারিয়ে যাওয়ার কারণ : তপনের হারিয়ে যাওয়ার কারণ এইসব কথা তার সব আনন্দকে অদৃশ্য করে দেয়।

প্র। ১৯। “…সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।” – কার কথা বলা হয়েছে? সেই আহ্লাদ না হওয়ার কারণ কী ছিল?

(উত্তর) উদ্দিষ্ট জন : প্রশ্নোদ্ধৃত অংশে তপনের কথা বলা হয়েছে।

আহ্লাদ না-হওয়ার কারণ : তপনের ছোটোমেসোর সহায়তায় ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় তার গল্প প্রকাশিত হলে চারিদিকে সবাই মেসোর মহত্ত্বের কথাই বলতে থাকে। মেসো না থাকলে কোনোদিনই ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকার সম্পাদক তপনের লেখা ছুঁয়েও দেখত না – এরকম কথাও অনেকে বলে। এইসব কথার মাঝখানে আসল যে লেখক, সে-ই যেন কোথাও হারিয়ে যায়। তপনের যেন কোনো কৃতিত্বই নেই। এইসব দেখে লেখা ছেপে আসার পর যে আহ্লাদ হওয়া উচিত ছিল তা হয় না তপনের।

প্র। ২০। “এতক্ষণে বইটা নিজের হাতে পায় তপন।” – কোন্ বইটার কথা বলা হয়েছে? সেটি হাতে পেয়ে তপন কী দেখতে পেয়েছিল?

(উত্তর) উদ্দিষ্ট বই : ‘সন্ধ্যাতারা’ নামক পত্রিকায় তপনের গল্প ছাপা হয়েছিল। বই বলতে এখানে ওই পত্রিকাকেই বোঝানো হয়েছে।

তপনের অভিজ্ঞতা : তীব্র উত্তেজনা আর কৌতূহল নিয়ে তপন পত্রিকাটির পাতা ওলটায়। কিন্তু পরক্ষণেই নিজের গল্প পড়তে গিয়ে সে চমকে ওঠে। গল্পের প্রতিটি লাইন তার কাছে সম্পূর্ণ নতুন মনে হয়। তার লেখার সঙ্গে ছাপার অক্ষরের কোনো মিল নেই। নিজের লেখা গল্পের মধ্যে সে আর নিজেকেই খুঁজে পায় না।

প্র। ২১। “তপন লজ্জা ভেঙে পড়তে যায়।” – তপন তার লজ্জা কাটিয়ে কী পড়তে যায় এবং পড়তে গিয়ে সে কী দেখে?

(উত্তর) প্রথম অংশ : তপন তার লজ্জা কাটিয়ে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় প্রকাশিত নিজের গল্পটি পড়তে থাকে।

দ্বিতীয় অংশ : বিদ্যালয়ে ভরতি হওয়ার প্রথম দিনের অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি নিয়ে তপন গল্পটি লিখেছিল। গল্পের নাম দিয়েছিল ‘প্রথম দিন’। এরপর তপনের মেসোমশাই গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় ছাপিয়ে দেন। পত্রিকাটি হাতে পেয়ে তপনের মা তাকে লেখাটি পড়ে শোনাতে বলেন। পড়তে গিয়ে সে দেখে তার লেখাটা আগাগোড়াই ছোটোমেসো সংশোধন করেছেন। তার প্রত্যেকটা লাইন তপনের অপরিচিত, সেখানে সে নিজেকেই খুঁজে পায় না।

প্র। ২২। “সবাই শুনতে চাইছে তবু পড়ছিস না?” – কী শুনতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে? তা না পড়ার কারণ কী?

(উত্তর) শুনতে চাওয়া বিষয় : উদ্ধৃত অংশটিতে ‘সন্ধ্যাতারা’ পত্রিকায় ছাপা হওয়া তপনের গল্পটি শুনতে চাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

না পড়তে পারার কারণ : তপনের মা তপনকে সন্ধ্যাতারায় প্রকাশিত গল্পটা পড়ে শোনাতে বলেন। কিন্তু গল্পটি কিছুটা পড়ে তপন অবাক হয়ে যায়। গল্পটা এমনভাবে কারেকশান করা হয়েছে যে, তপন তার মধ্যে নিজের লেখা খুঁজে পাচ্ছিল না। সম্পূর্ণ নতুন একটা গল্প বলেই তার মনে হয়েছে সেটাকে। গভীর হতাশা আর দুঃখ তপনকে যেন নির্বাক করে দিয়েছিল। তাই সে গল্পটা আর পড়তে চায়নি।

প্র। ২৩ “তপনের মনে হয় আজ যেন তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন”।-‘আজ’ বলতে কোন দিনকে বোঝানো হয়েছে? তপনের এরকম মনে হওয়ার কী কারণ ছিল?

(উত্তর) উদ্দিষ্ট দিন : সন্ধ্যাতারা পত্রিকাটি যেদিন তপনের বাড়িতে আসে এবং মায়ের কথায় সে সেখানে তার প্রকাশিত গল্পটি পড়তে যায়, সেদিনের কথাই এখানে বলা হয়েছে।

তপনের মনে হওয়ার কারণ : গল্প পড়তে গিয়ে তপন দেখে সংশোধনের নামে ছোটোমেসো সেই লেখার আগাগোড়াই বদলে দিয়েছেন। তার নিজের লেখার সঙ্গে ছেপে আসা লেখার কোনো মিল নেই। লজ্জায়, অপমানে তপন ভেঙে পড়ে। তার চোখে জল চলে আসে। যে দিনটি সবচেয়ে আনন্দের দিন হতে পারত, সেটিকেই তার জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন বলে মনে হয়।

প্র। ২৪ “শুধু এই দুঃখের মুহূর্তে গভীরভাবে সংকল্প করে তপন” – কোন দুঃখের মুহূর্তের কথা বলা হয়েছে? তপন গভীরভাবে কী সংকল্প করেছিল?

(উত্তর) দুঃখের মুহূর্ত : নিজের লেখা হিসেবে সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তপন যখন অন্যের লেখা পড়েছিল সেটাই ছিল তার চরম দুঃখের মুহূর্ত।

তপনের গভীর সংকল্প : নিজের লেখা পড়তে গিয়ে তপন দেখে, মেসোমশাই আগাগোড়াই লেখাটা সংশোধন করে নিজের পাকা হাতে গল্পটি লিখে দিয়েছেন। অপমানে, লজ্জায় তপন প্রতিজ্ঞা করে যদি আর কোনোদিন লেখা ছাপানোর হয়, সে নিজে গিয়ে তা ছাপতে দেবে। না ছাপলেও ক্ষতি নেই, অন্তত নিজের নামে অন্য কারও লেখা তাকে পড়তে হবে না।

প্র। ২৫ “যে ভয়ংকর আহ্লাদটা হবার কথা, সে আহ্লাদ খুঁজে পায় না।” – ‘আহ্লাদ’ হবার কথা ছিল কেন? ‘আহ্লাদ খুঁজে’ না পাওয়ার কারণ কী?

(উত্তর) আহ্লাদ হবার কারণ : তপনের লেখা গল্প সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় প্রকাশিত হলে লেখক হিসেবে তার নাম ছাপা হবে-এ কথা ভেবেই তপনের আহ্লাদ হওয়ার কথা ছিল।

আহ্লাদ খুঁজে না-পাওয়ার কারণ : তপনের ছোটোমেসোর সহায়তায় সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় তার গল্প প্রকাশিত হলে চারিদিকে সবাই মেসোর মহত্ত্বের কথাই বলতে থাকে। মেসো না থাকলে কোনোদিনই সন্ধ্যাতারা পত্রিকার সম্পাদক তপনের লেখা ছুঁয়েও দেখত না-এরকম কথাও অনেকে বলে। এইসব কথার মাঝখানে আসল যে লেখক, সে-ই যেন কোথাও হারিয়ে যায়। তপনের প্রত্যাশামতো কেউ লেখকের প্রশংসা করে না। তপনের যেন কোনো কৃতিত্বই নেই। এইসব দেখে। লেখা ছেপে আসার পর যে আহ্লাদ হওয়ার উচিত ছিল তা তপনের হয় না।

প্র। ২৬ “তার চেয়ে দুঃখের কিছু নেই, তার থেকে অপমানের।” – কার সম্পর্কে এ মন্তব্য? ‘তার চেয়ে’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?

(উত্তর) উদ্দিষ্ট জন : ‘জ্ঞানচক্ষু’ গল্পে তপন সম্পর্কে এ মন্তব্য। – ‘তার চেয়ে’ কথার অর্থ: মা-র কথামতো সন্ধ্যাতারা পত্রিকায় – প্রকাশিত নিজের গল্পটি পড়তে গিয়ে তপন দেখে গল্পের প্রতিটি লাইন তপনের অপরিচিত। সংশোধনের নামে ছোটোমেসো গল্পটি নতুন করে লিখে দিয়েছেন। সেই গল্পের মধ্যে তার লেখার কোনো ছোঁয়াই ছিল না। নিজের লেখা পড়তে বসে অন্যের লেখা পড়ার থেকে দুঃখের কিছু আছে বলে তপনের মনে হয় না। ‘তার চেয়ে’ কথাটিতে এই অপমানজনক বিষয়টির কথাই বোঝানো হয়েছে।


দশম শ্রেণির বাংলা অন্যান্য লেখা


পিডিএফ লিঙ্ক নিচে 

✅ Go Home Now ✅

আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন✅ Join Our Facebook Page ✅
✅ Join Our Telegram Channel ✅

————————————————————-
File Name : জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে 25+ ব্যাখ্যাধর্মী ৩ নম্বরের প্রশ্নোত্তরFile Format : পিডিএফ

File Language : বাংলা

File Location : গুগল ড্রাইভ

Download Link :  জ্ঞানচক্ষু গল্প থেকে 25+ ব্যাখ্যাধর্মী ৩ নম্বরের প্রশ্নোত্তর

————————————————————-

Leave a Comment

error: Content is protected !!