Last Update : June 29, 2024
‘ভাত’গল্পে বাসিনী চরিত্রটি আলোচনা করো।
পরিচয়
মহাশ্বেতা দেবীর ‘ভাত’ (মহাশ্বেতা দেবীর ‘শ্রেষ্ঠগল্প’ থেকে সংকলিত) গল্পে বাসিনী অপ্রধান চরিত্র হলেও তার মাধ্যমে কর্তা চরিত্রের প্রকাশ ঘটে। সুন্দরবনের বাদা অঞ্চলের বাসিন্দা উৎসব নাইয়ার গ্রাম সম্পর্কে বোন ছিল বাসিনী। বড়ো বাড়ির পরিচারিকা বাসিনীই বন্যার কবলে সর্বস্বান্ত উৎসবকে যজ্ঞের কাঠ কাটার জন্য ‘বড়ো বাড়ি’তে নিয়ে এসেছিল।
মানবিকতা
সহানুভূতিশীল ও মানবিক চরিত্রের বাসিনী নিশ্চিন্ত কাজের সুযোগ পেয়েও শহুরে বিলাসিতা দেখে অমানবিক হয়ে ওঠেনি। মনিবের নিষ্ঠুর আচরণে সে ক্রোধ প্রকাশ করেছে। নিরন্ন উৎসবকে না খাইয়ে, তাকে দিয়ে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করানো বাসিনীর মতো নিম্নবৃত্তের মানুষের কাছেও অমানবিক মনে হয়েছে এবং তার জন্য সে ধিক্কার জানাতে ভোলেনি। পাশাপাশি সে উৎসবকে এক ঠোঙা ছাতু দিয়ে তার ক্ষুধা নিবারণের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
বিশ্বাসী ও অসহায়
বড়ো পিসিমার বিশ্বাসী লোক এই বাসিনী। পিসিমার নির্দেশে লুকিয়ে চাল বিক্রি করে। বহুকালের লোক হওয়ায় বাড়ির সমস্ত মানুষ তার চেনা। তাই বড়ো বাড়িকে ‘পিশাচের বাড়ি’বলতেও তার বাধেনি। আবার বন্যায় দেশ ভেসে গেলেও সে খোঁজ নিতে যেতে পারেনি। যা তার পরাধীনতা ও অসহায়তার পরিচায়ক।
বাস্তববাদী
বাসিনী একটি বাস্তববাদী চরিত্র। গ্রাম্যমনস্কতার মানুষ বাসিনী বুড়োকর্তার ‘খাস ঝি’সম্পর্কে তার বহুদিনের সঞ্চিত ক্রোধ প্রকাশ করেছে সংলাপে।
কুসংস্কারগ্রস্ত
বাসিনী মন্ত্র-তন্ত্রে, সংস্কারে বিশ্বাসী। একদিকে সে যজ্ঞগুণে বিরাশি বছরের বুড়োকর্তার আয়ুবৃদ্ধিতে অবিশ্বাসী, অন্যদিকে বুড়োকর্তার মৃত্যুতে অশৌচগ্রস্ত ভাত নিয়ে উৎসবের পালানো দেখে ভীতসন্ত্রস্ত। মোটের উপর, চরিত্রটি অত্যন্ত বাস্তবোচিত অর্থাৎ বাস্তবগুণসম্পন্ন।
এই প্রশ্নটায় মন্তব্য কই